ফিরে এল বারো বছর আগের সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি।
২০০৪-এর ২৬ ডিসেম্বর। সুনামিতে তছনছ হয়ে গিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ। সেই দুঃস্বপ্ন মনে করিয়ে দিয়ে আজ ভোরে বেশ বড়সড় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপপুঞ্জ।
এই ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা একশো ছুঁইছুঁই। ধ্বংসস্তূপের তলায় এখনও চাপা পড়ে অনেকেই। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। গুরুতর আহত প্রায় ৮০।
মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভের তরফে জানানো হয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটা তিন মিনিটে কেঁপে ওঠে উত্তর ইন্দোনেশিয়ার আচে প্রদেশের বিস্তীর্ণ অংশ। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৫। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল পিড়ি জয়া। তবে সুনামি সতর্কতা জারি হয়নি। আজ ভোরের ভূমিকম্পের পরে কয়েক ঘণ্টায় পাঁচটি আফটার শক অনুভূত হয়েছে।
দেশের সেনাবাহিনীর প্রধান জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত ৯৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে মাত্র চার জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। আরও অনেকে এখনও ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকে রয়েছেন। তবে তাঁরা আদৌ জীবিত কি না, তা নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি।
সূত্রের খবর, আজকের ভূমিকম্পে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বান্দা আচে। বারো বছর আগে ভয়ঙ্কর সুনামির ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে এই শহর। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই প্রকৃতির রোষে ফের বিধ্বস্ত বান্দা আচে। আজ ভোরে যখন ভূমিকম্প হয়েছে, তখন বেশির ভাগ মানুষেরই ঘুম ভাঙেনি। ফলে ঘুমন্ত অবস্থাতেই বাড়িঘরের তলায় চাপা পড়ে গিয়েছেন তাঁরা।
ভূমিকম্পের পরে বান্দা আচের কিছু ছবি সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তাঘাটে বড়সড় ফাটল তৈরি হয়েছে। বহুতলগুলিও প্রায় ধুলোয় মিশে গিয়েছে। উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটিগুলিও। ভেঙে পড়েছে মসজিদ। ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশুর মৃতদেহ বার করে আনা হচ্ছে, এ রকম ছবিও ছড়িয়েছে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে।
ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা হাসবি জয়া বলেন, ‘‘সবাই ঘুমোচ্ছিলাম। আচমকা দুলে উঠল চারপাশ। বিপদ বুঝে বাড়ির বেরিয়ে গিয়েছিলাম। চোখের সামনেই ভেঙে পড়ল বাড়ির ছাদ। আর আমার প্রতিবেশীর বাড়িটা তো ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে।’’